Editor. Nihar Ranjan Das
Siliguri. Darjeeling. India
🌹🌹🌹🌹🌹🌹🌹🌹🌹🌹🌹🌹🌹
পাথর ছবি
মৃত্যু এখন ভেলকি জাদু
বুড়ো দিঘির চর
নষ্ট গ্রহের পাথর ছবি
বরফ শীতল চোখ
কান্না গুলি দায়িত্ব ভুলে
কার্নিশে জল ঝরে।
গুনগুন সুর ওঠে- হায়রে মানুষ
জীবন এখন নতুন ঘুড়ি
সামনে-পিছে মৃত্যুপুরী।
সপাৎ সপাৎ পাছায় বাড়ি- উধাও সে বয়
তুলসী তোকমা বিজলি দানা হুটোপুটি খায়।
মৃত্যুর সাথে লড়তে চায়। কটমট দাঁত হুংকার
কোন তোর আজরাইল বাপ ইসরাইল বাপ
পিছন যুদ্ধ? সাহস করে সামনে আয়।
এত কিছু দেখে বেকুব আকাশ
রং ছড়িয়ে নিরব কেন সাজে
লাশের গাড়ি ভীষণ ভারী
আজব চাকায় চলে।
------
রসিকতা
আজ সারাদিন বৃষ্টি হবে,এটাই ছিল কথা।
মাঠ ভরে যাক,সঙ্গে থাকুক মাদক নীরবতা।
মেঘলা সকাল,দমকা বাতাস একটু বে- খেয়ালী--
এক বিরহী একলা ভেজে,হয়তো "চোখের বালি"।
বর্ষাতিটা সরিয়ে রেখে
একটু অবাধ্যতাই করলি না হয়,
দুইজনাতে একটু ভিজি আয়।
ঐ দূরে কোন মন খারাপি,জানলা খুলে রেখে--
শুন্য চোখে একটানা ঐ আকাশটাকে দেখে?
বাড়ন্ত যার ঘরের রসদ,মেঘলা মাদকতা,
হাত বাড়িয়ে বৃষ্টি মাপা,করুন রসিকতা।
দেশ জুড়ে আজ মেঘ ভেঙেছে, আর ভেঙেছে মন।
দেমাগী ঐ বর্ষন কাল চলবে কতক্ষণ?
খুঁজছি আমি এ আদ্রতায় একটু বড় শহর।
অল্প খাবার আর আশ্রয় জুটুক অবাঞ্ছিতর।
উথাল-পাথাল হাওয়ার সাথে বন্ধু কিছু জুটুক।
ইচ্ছে গুলোয় আগুন জ্বেলে,আর দুটো ভাত ফুটুক।
-------
বলতে পারি
নিখুঁত কবিতা এখনো লেখা হল না,দলছুট অক্ষরবহর ছুঁয়ে চলে অসহ্য যন্ত্রনায়,মন চলে যায় মাঠের পারের উদাসীনতায়।
জনসমাজ শোষণ জর্জরে আবর্তিত,কবিতারা এখন কেবলি দর্পনে দর্শিত। উৎপিড়ীত কৃষকের সিক্ত চোখের পাতায় মুক্তির ভীত রচনার উন্মাদনা,দাসত্ব পীড়িত বাস্তব জনজীবন ।নিখুঁত কবিতায়,নিখুঁত কথা লেখা হল কৈ ।
বিস্মৃতির অতল থেকে বুড়বুড়ি কাটে আধপেট খাওয়া সরল মানুষের গ্রাম সংসার ।ধীরে ধীরে ধানক্ষেতের আলপথ হয় সংকুচিত ,উদাসী দিগন্তরেখায় ।দৈনন্দিন খামোশী দাঁতে দাঁত চেপে শক্তি সঞ্চয় করে নেয় ।কবিতার আনাচেকানাচে হাঁটতে থাকা ক্লান্ত শরীরের কথা,আর দিনযাপনের চুঁইয়ে পরা ঘামের পুরু মাটিতে বার বার বীজ থেকে জন্ম নেবে নবীন শিশু চারা,এ কথা আমি হলপ করে বলতে পারি ।
------
স্বপ্নসাথী
কাঁকরের পথ নয়,ছায়াপথ তোমার পছন্দ।
বলতেই পারতে!
আকাশের গায়ে ঘর বাঁধবে
রামধনুর সাতরঙ মিলিয়ে ছবি আঁকবে
সাদা তো তোমার প্রিয় রঙ।
সূর্যের সাথে বন্ধুত্ব করবে বুঝি!
শূন্যে ভাসবে, দূর হতে পৃথিবী দেখবে,
তারাদের সাথে গলাগলি করবে।
বেশ!আমায় ডাকতে পারতে!
আমিও না হয় সঙ্গী হতাম।
------
জন্ম
একটা জন্ম, ভ্রুণের প্রাণ পাওয়ার কাব্যকথা।
একটা জন্ম, সূর্যের প্রথম কিরণে, নিজেকে ভিজিয়ে নেওয়া,
ভোরের নরম আলোয় গা ভাসিয়ে দেওয়া।
আলপথ , ধুলোপথে , ভাটিয়ালি, বাউলের সুরে ডুবে যাওয়া,
মেঠোপথ পেরিয়ে ধানের শীষের ছন্দে ছন্দে দুলতে থাকা।
একটা জন্ম, জোনাক আলোয় ভেসে যাওয়া,
কখনও বা জ্যোৎস্নার আলোয় নিজেকে বন্দী করা।
একটা জন্ম, আদুরে বৃষ্টি ফোঁটাদের সাথে পথচলা,
জীবন জুড়ে রংবাহারী ছাতাদের গল্প হয়ে থাকা ।
একটা জন্ম, কিছু মানুষের ইচ্ছে পূরণের মেলা,
আবার কিছু মানুষের আধপেটে কাটিয়ে দেওয়া।
একটা জন্ম, ছায়াপথ মাড়িয়ে আলোতে এগিয়ে যাওয়া,
আবার কখনও স্বপ্ন পূরণ বা অধরা স্বপ্নের গল্প হয়ে থাকা,
একটা জন্ম , একটা জীবন !!
------
পুনর্জন্ম
প্রতিদিন কবর হই...
কবরে ফুল ছড়িয়ে দেয় না কেউ,
করে না কেউ অন্তিম সৎকার...!
রূপ- যৌবন কর্দমাক্ত,
শরীর পচে দূর্গন্ধ।
তবুও বেঁচে থাকার প্রয়াস...!
লস্কার শীতল প্রবাহে
স্বপ্ন দেখি পুনর্জন্মনের!
অপেক্ষারত...
লাবণ্যময়ী এক সুন্দরী!
------
বিভীষণ
বিভীষণ আজও ভীষণভাবে প্রাসঙ্গিক ।
ভূমিপুত্র রাবণদের
ভূমি ছাড়া , রাজ্য ছাড়া করতে ,
আজও বিভীষণ ছাড়া গতি নেই ।
হাজার ভালো কাজও ,
ছোটো খাটো ভুলত্রুটির কাছে ,
ঢাকা পড়ে যায় ,
প্রচারের ঢক্কানিনাদে ।
যুগে যুগে , বীর রাবণদের ,
এভাবেই আত্মাহুতি দিতে হয় ,
নিজভূমে পরবাসী, পরাজিত হয় সে ।
-------
উল্লসিত রাত
নিঝুম রাতে চুপকথারা যখন
উদ্দাম সুরে উদ্বেলিত, দেহবল্লরিতে
উল্লাস যাপনে মগ্ন কিছু মত্ত মানব,
নিয়ন আলোয় সৃষ্ট মায়াবী ইন্দ্রজালের
স্বর্গীয় মৌতাতে সম্পর্করা হারিয়ে যায়!
সামাজিক কীটেরা আঁকে নীল নকশা ,
ক্ষমতাবানদের আশীর্বাদ আর সান্নিধ্যে।
ঠিক সেই মুহূর্তে পাশের ঝুপড়িতে অনাহারি
শিশুর কান্নার শব্দ শোনা যায়,
"মা, খুদা পাইসে।" মা ধমক দিয়ে বলে,
"কাইল খাবি। আইজ ঘুমা দেহি।"
তবু কান্না থামে না, পেটে আগুন জ্বলছে যে!
ওরা যে জানে না, কেন ওদের খাবার জোটে না।
হুল্লোড় আর কান্নার কথারা রাতের আঁধারে
দূর থেকে আরো দূরে মিলিয়ে যায়।
শুধু এক আকাশ তারার কান্না
বৃষ্টি হয়ে ঝরে পড়ে অসাম্যের জনপদে।
তারাদের কথা একদিন আগুন জ্বালাবে
মানুষের মনে, সবহারাদের প্রাণে, তারপর উল্লাসের রঙধনুতে বিশ্বমানব উঠবে জেগে।
------
শান্তিপর্ব
একদিন,
থেমে যাওয়া ঝড়,
আমাদের দেখাবে মেঘ ভাঙ্গা সূর্যের মুখ।
সোনালী রূপালী আলো
পৃথিবীতে এসে পড়ে
জাগাবে অনাঘ্রাত সুখ।।
পাশুপত-প্রলয়ের শেষে,
প্রসন্ন নটরাজ তাণ্ডব থামাবেন হেসে।
পাদদাপে তার যত ধুলো,
শান্তির সিঞ্চনে ক্লান্ত মাথা ছোঁয়াবে
দাপিত পৃথিবীর শয্যায় এসে।।
একদিন,
শান্ত হবে সব ক্রোধ-
চেতনায় লীন হয়ে যাবে রক্তাক্ত বিরোধ।
একদিন সব আক্রোশ,
কুরুক্ষেত্রের পরের সন্ধ্যায়
শান্তিপর্বের অনুশোচনায়
নিভে যাবে সব প্রতিশোধ।।
হিংসার রক্তাভ চোখ,
ঝাপসা দৃষ্টিপাতে দেখবে
সামনে অশ্রুর পারাবার।
গাণ্ডীব সুদর্শন সব
বিসর্জনে ভেসে যাবে
অতল সাগর জলে-
নিবৃত্ত হবে উদ্যত সব অসিধার।।
একদিন,
শেষ হবে শরশয্যায়
ক্ষত-বিক্ষত দেবব্রতের অন্তিম শয়ান।
প্রসন্না অম্বার দেহ,
চিতার লেলিহান দাবদাহে
খুঁজবে না পরজন্মের হিংস্র অভিযান।।
একে একে মুছে যাবে
দুঃস্বপ্নের,বেদনার ছবি।
সার সার মৃত্যুর শেষে
আলোকসাগরে ভেসে
অনুরাগগীত লিখবেন কোনো কবি।
------
The end of 8th page.
No comments:
Post a Comment